স্বাধীনতা হীনতায়

পুলিশের উন্মত্ত আচরণের প্রতিবাদ করতে গিয়ে অবনীশ গুলি ও কেস দুই’ই খেল।পুলিশ প্রহরায় এখন হাসপাতলে। হোস্টেলের রুমমেট হিসাবে যতটুকু করার তত টুকু করছি। ওর আপন বলতে বিধবা মা,খবর পেলেও আসতে পারবেন কিনা সন্দেহ।
অবনীশের অবস্থা ভাল নয়। ফ্রেস ব্লাড লাগবে।তাই সকাল সকাল বেরিয়ে পড়েছিলাম। হস্টেলের পিছনের পাড়ায় স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে রক্ত দান শিবির চলছে।যদি একটা কার্ড পাওয়া যায়।সেই উদ্দেশ্যেই যাওয়া। কিন্তু ওরা অবনীশের রাজনৈতিক পরিচয় জানতে চাইল। সুতরাং বিধি বাম।
সঙ্গে সঙ্গে মনে পড়ল সুবিমলের কথা।কলকাতা পুলিশের সার্জেন্ট। ওর সহায়তায় রক্ত পেতে বেলা দুটো বেজে গেল। ফেরার পথে বাসটা গেল আটকে। গণতান্ত্রিক চেতনা সম্পন্ন মানুষ এক মহা মিছিলে সামিল হয়েছেন। বরফ দ্রুত গলছে। বাস থেকে নেমে ট্যাক্সির খোঁজ করলাম।পেট্রো পণ্যের মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে ট্যাক্সি ধর্মঘট ।
হাসপাতালে ফিরতে সাড়ে পাঁচটা বেজে গেল।অবনীশ অস্থির ভাবে মাথা নাড়ছে বিকারে-
“শুনেছিস প্রদীপ; সুভাষ বোস আত্মপ্রকাশ করেছেন। আর কোন কষ্ট থাকবে না।”
“এত দেরী করলেন দেখছেন না ডেলিরিয়াম শুরু হয়ে গেছে, যান বাইরে যান”। ডাক্তারের গলার স্বরে মাত্রাতিরিক্ত শীতলতা।
করিডোরে তখন নার্স ও আয়া র মধ্যে দৈনিক উপরির বাটোয়ারা নিয়ে ঝগড়া লেগেছে। নীচে নামতে নামতে মনে হল আজ রাতের মধ্যেই কোন এক স্বাধীন চিরশান্তিময় দেশে পাড়ি
দেবার ভিসা পাসপোর্ট তৈরী হয়ে যাবে।
অবনীশের জন্যে।

Leave a Reply